হেলথ ডেস্ক, ২১ এপ্রিল ২০২০ইং (দেশপ্রেম রিপোর্ট): অদ্ভুত এক ঘটনার শিকার হয়েছেন চীনে কোভিড-১৯ বা করোনা আক্রান্ত দুই চিকিৎসক। সম্প্রতি তাদেরকে একদম মৃত্যুর কাছ থেকে ফিরিয়ে আনেন সহকর্মী চিকিৎসকরা। কিন্তু সুস্থ হয়ে তারা আবিষ্কার করেন, তাদের পুরো শরীর গাঢ় কালো হয়ে গেছে। ওই দুই চিকিৎসকের নাম ড. ই ফ্যান ও ড. হু উইফেং। উভয়ের বয়সই ৪২ বছর। গত জানুয়ারি মাসে রোগীর করোনা পরীক্ষার সময় তারা এ ভাইরাসে আক্রান্ত হন। উভয়েই উহানের একটি হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সার্স-কোভ-২ প্রজাতির করোনা ভাইরাসের আক্রমণে তাদের কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এর ফলে শরীরের হরমোনগুলোর ভারসাম্য একেবারেই নষ্ট হয়ে গেছে। আর তাতেই গায়ের রঙ কালো হয়ে গেছে। চীনা গণমাধ্যমও এ খবর প্রকাশ করছে। আক্রান্ত দুই চিকিৎসক ই ও হু করোনা ভাইরাসের নতুন প্রজাতির বিস্তার সম্পর্কে প্রথম সতর্ককারী চিকিৎসক লি ওয়েনলিয়াং-এর সহকর্মী। গত ৭ ফেব্রুয়ারি লি নিজেও কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারান। এর আগে তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন। ই ও হু গত ১৮ জানুয়ারি অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে ভর্তি হন।
চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সিসিটিভি জানিয়েছে, প্রথমে ওই চিকিৎসকদের উহান পালমোনারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখান থেকে পাঠানো হয় টংজি হাসপাতালের জংফা শিনচেং শাখায়। চিকিৎসক ই একজন কার্ডিওলোজিস্ট। তাকে ৩৯ দিন ধরে লাইফ সাপোর্টের মাধ্যমে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছিল। এই লাইফ সাপোর্ট হৃদপিন্ড ও ফুসফুস ছাড়াই মানুষের দেহে অক্সিজেন প্রবেশ ও রক্তে তা সরবরাহ করে থাকে। এভাবে প্রায় সুস্থ হয়ে উঠেছেন ই। নিজেই তিনি সেটা জানিয়েছেন সবাইকে। তিনি বলেন, এখন চাইলেই নড়াচড়া করতে পারেন। তবে কারো সাহায্য ছাড়া হাঁটা কষ্টকর এখনো। তাকে আর লাইফ সাপোর্টে থাকতে হচ্ছে না। তিনি এখন সাধারণ ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে অপর চিকিৎসক হু এখনো কিছুটা অসুস্থ। ফলে তার কোনো মন্তব্য নেয়া যায়নি। তবে তিনি হ্যান্ডশেক করে অভিবাদন জানিয়েছেন। তার অবস্থা ড. ই-এর থেকে বেশি ভয়াবহ। তিনি একজন ইউরোলজিস্ট এবং ৯৯ দিন ধরে তিনি পড়ে আছেন।
সহকর্মী লি জানান, তিনি হু-এর মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বিগ্ন। তাকে দেখতে গেলেই তিনি অনবরত কথা বলতে শুরু করেন। তার লাইফ সাপোর্ট খুলে নেয়া হলেও এখনো তাকে আইসিইউতে রাখতে হচ্ছে। লি জানান, তার ধারণা চিকিৎসক হু ও ই-এর গায়ের রঙ এমন কালো হয়ে যাওয়ার কারণ তাদেরকে দেয়া ঔষধ। তিনি এ জন্য একটি নির্দিষ্ট ঔষধের কথা বলেন। তবে এর নাম তিনি জানাননি। ড. লি আশা প্রকাশ করেছেন যে, পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠলেই উভয় চিকিৎসকের গায়ের রঙ পূর্বের মতো হয়ে যাবে।
Leave a Reply